Honey

সুন্দরবনের বৃক্ষরাজি

সুন্দরবনের বৃক্ষরাজি

সুন্দরবনে খুবই চমৎকার সব গাছের ভিতরে কিছু গাছের পরিচিতি 

খলসিঃ ‘‘হানিপ্ল্যান্ট‘ হিসেবে খলসি/খলিশা গাছের বেশ কদর সুন্দরবনে। গুল্ম জাতীয় এই বৃক্ষ মার্চ-এপ্রিলে যখন ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। মৌমাছিরা তখন সেই ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে গাছে গাছে চাক বাঁধে। সুন্দরবনের খলসি মধু বিখ্যাত ও উন্নতমানের। জ্বালানী সহ বিভিন্ন কাজে খলসি ব্যবহৃত হয়। খলসি গাছ সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে বেশী পাওয়া যায়। খলসি ফুলের মধু বিখ্যাত ।

সুন্দরীঃ সুন্দরী সুন্দরবনের প্রধান বৃক্ষ। ১৫-১৭ মিটার উচ্চতার এই বৃক্ষের কাঠ অত্যন্ত টেকসই, মজবুত ও ভারী। সাঁকো, নৌকা, আসবাবপত্র, ঘরের খুঁটি, বৈদ্যুতিক পিলার প্রভৃতি তৈরীতে ব্যবহৃত সুন্দরী বৃক্ষ জ্বালানী হিসেবেও উত্তম। সুন্দরী বৃক্ষ সুন্দরবনের পূবাঞ্চল এ অর্থাৎ সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ, বাগেরহাট জেলার শরনখোলা রেঞ্জ, চাঁদপাই রেঞ্জ এবং সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ এর খুলনা রেঞ্জ, সাতক্ষীরা রেঞ্জে সুন্দরী বৃক্ষ পাওয়া যায়।

পশুরঃ বনের অন্যতম মূল্যবান বৃক্ষ হলো পশুর। এই গাছের নামে একটা নদীরও নামকরণ করা হয়েছে। বনের অধিক লোনা অঞ্চলে নদী-খালের তীরে এর বিস্তৃতি। নৌকা, আসবাবপত্র, ঘরের খুঁটি, বৈদ্যুতিক খুঁটি প্রভৃতি তৈরীতে ব্যবহৃত হয়ে আসা এই গাছ বর্তমানে কাটা সম্পূর্ণ নিষেধ। মাটির নিচে শত বছরেও নষ্ট হয় না পশুর কাঠ। তাই রেল লাইনে বহুল ব্যবহৃত হয়।  বনের জীবাশ্ম হিসেবেও তাই এর গুরুত্ব অনেক। পশুর গাছ সুন্দরবনের প্রায় সব জায়গাতে পাওয়া যায়। তবে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে পশুর গাছ ব্যপকহারে পাওয়া যায়।

গেওয়াঃ সুন্দরবনের সর্বাধিক বর্ধনশীল গাছ। এই গাছ সর্বোচ্চ ১৩ মিটার উঁচু হয়। এর কান্ড ও কাঠ বেশ নরম। গেওয়ার প্রধান ব্যবহার ছিল খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের কাঁচামাল হিসেবে। প্যাকিং বক্স, দিয়াশলাই, খুঁটি, পেন্সিল, ঢোল, তবলা ও খেলনা নির্মাণেও এর যথেষ্ট ব্যবহার রয়েছে। এর বাকল জ্বালানী হিসেবে সমাদৃত। গেওয়া ফুল মধুর প্রধান উৎস। এর কচিপাতা ও ফল হরিণের খাদ্য। গেওয়ার সাদা রঙয়ের আঠা অত্যন্ত বিষাক্ত। মানুষের চোখে লাগলে দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হতে পারে।

গরানঃ গরান ঝোপ জাতীয় উদ্ভিদ। এর কাঠ অন্যতম সেরা জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মাঝারী উচ্চতার (৩-৫ মিটার) অত্যন্ত শক্ত লালচে বর্ণের গরাণ গাছ ঘরের খুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বনের প্রায় সর্বত্রই কম-বেশি গরাণ দেখা যায়। আর লুকাবার স্থান হিসেবে বাঘের পছন্দ এই গরাণ ঝোপ। ঔষধি গুণসম্পন্ন এই গরানের ছালের কষ রং তৈরি, জাল রং করা ও চামড়া ট্যান করার কাজে ব্যবহৃত হয়। সুন্দরবনের অন্যতম অর্থকরী উদ্ভিদ গরান। সিডর পরবর্তী সুন্দরবন হইতে গরাণ আহরণ বন্ধ আছে। গরান সুন্দরবনের সাগর পাড়ের এলাকাতে বেশী পরিমানে জন্মে।

 

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক খাঁটি মধু কিনতে ভিজিট করুন: ‍Pure-Honey

About Author

SatkhiraShop